Saturday 11 July 2020

ইন্টারনেট কি? এর বিস্তৃতি কত? আমরা ইন্টারনেট সম্পর্কে কতটুকু জানি?

Posted by Habibul Islam || 11,july,2020 
এই ব্লগ টা করার জন্য প্রথমেই  ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারন আমি নিজেই ইন্টারনেট সম্পর্কে খুব বেশি অবগত নই।তারপরেও ইচ্ছা হলো ক্ষুদ্র জ্ঞান বন্টনের।কারন জ্ঞান বন্টনে তা আরও বেড়ে যায়।   
 

ইন্টারনেট কি?

Image not found

ইন্টারনেট কি সেটা সহজ ভাষায় বললে, আন্তর্জাল বা ইন্টারনেট হল এমন একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যেটা পুরো পৃথিবীর সকল কম্পিউটারকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে। তবে আরেকটু বিস্তারিতভাবে বললে- কিছু কম্পিউটার একে অপরের সাথে সংযুক্ত থেকে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরী করে। এভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ কম্পিউটার একে অপরের সাথে সংযুক্ত থেকে যে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো তৈরি করেছে, সেগুলোর সমষ্টিকেই আমরা ইন্টারনেট বলি। আর আইপি বা ইন্টারনেট প্রটোকল নামের এক প্রামাণ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে কম্পিউটারগুলো একে অপরের সাথে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে।

সম্পূর্ণ ইন্টারনেটকে মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. সার্ফেস ওয়েব (Surface Web), ২. ডীপ ওয়েব (Deep Web), ৩. ডার্ক ওয়েব (Dark Web)৷

image not found

সার্ফেস ওয়েব (Surface Web):

আমাদের নজরে আসা ইন্টারনেটের জগতকেই মূলত সার্ফেস ওয়েব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এই যে, আপনারা গুগলে কিংবা বিভিন্ন সাধারন সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করে তথ্য পাচ্ছেন তা সকল গুলোই সার্ফেস ওয়েব এর অন্তর্ভুক্ত। এমনি ভাবে আপনার প্রতিদিনের নিউজ আপডেট সাইট গুলো, প্রযুক্তি সাইট গুলো, গান ডাউনলোড সাইট গুলো ইত্যাদি সবাই সার্ফেস ওয়েবের অংশ। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, এই সার্ফেস ওয়েব সম্পূর্ণ ইন্টারনেটের মাত্র ৫% জুড়ে রয়েছে! আশ্চর্যের কিছুই নেই। মাত্র তো শুরু...

ডীপ ওয়েব (Deep Web): 

একটি গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে, সম্পূর্ণ ইন্টারনেটের প্রায় ৯৫% অংশ হলো এই ডীপ ওয়েব। এখন এই ডীপ ওয়েবে কি কি সংরক্ষিত রয়েছে সে বিষয়ে প্রথমে জেনে নেয়। দেখুন আপনার যতো অনলাইন স্টোরেজ রয়েছে যেখানে আপনার সকল ডাটা স্টোর করা রয়েছে। যেমন কথা বলি গুগল ড্রাইভ নিয়ে বা ড্রপ বক্স নিয়ে। আবার বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে যতো গুলো গবেষণা তথ্য বা গোপন তথ্য স্টোর করা রয়েছে বা ব্যাংক এর যতো গুলো তথ্য বা ডাটাবেজ রয়েছে অথবা সরকারের যে গোপন প্রজেক্ট গুলো সংরক্ষিত রয়েছে তো এই সবই হলো ডীপ ওয়েবের অংশ। অর্থাৎ বাংলা ভাষায় বলতে যে তথ্য গুলো আপনি গুগল সার্চ করে কখনোও খুঁজে পাবেন না সেটিই হলো ডীপ ওয়েব।
ডীপ ওয়েব থেকে আপনি যদি কোন তথ্য অ্যাক্সেস করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে একটি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস। একটি বিশেষ সাইট একটি বিশেষ সার্ভারের জন্য একটি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস। এবং ওয়েব অ্যাড্রেসের সাথে আপনার প্রয়োজন একটি বিশেষ অনুমতি, যে আপনি ঐ ওয়েবসাইট টির উমুক তথ্য অ্যাক্সেস করার উপযোগী। অনুমতি গ্রহন করার জন্য আপনাকে হয়তো কোন লগইন আইডি বা পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে হতে পারে অথবা সেটি যেকোনো ধরনের অথন্টিকেশন হতে পারে। কিন্তু আপনি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস ছাড়া কখনই ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেননা ডীপ ওয়েবের কোন তথ্যই গুগল বা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকে না। তো আপনি যতই সার্চ করতে থাকুন না কেন, আমার গুগল ড্রাইভে কি সেভ করা আছে তা আপনি কখনই খুঁজে এবং অ্যাক্সেস করতে পারবেন না।


 ডার্ক ওয়েব( Dark Wave): 

ইন্টারনেটের আরো একটি অধ্যায় আছে যা সবার কাছে লুকায়িত হয়ে থাকে, তার নাম হলো ডার্ক ওয়েব বা ইন্টারনেটের কলঙ্কিত অংশ। দেখুন ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে শুধু এই পোস্ট থেকে জেনে রাখুন। কিন্তু আমি শুরু করার আগে আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই যে এই ডার্ক ওয়েব সম্পূর্ণ অবৈধ ইন্টারনেট। ডার্ক ওয়েব কখনই ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না।এবার চলুন ডার্ক ওয়েব নিয়ে সামনে এগোনো যাক। বন্ধুরা ডার্ক ওয়েবে মনে করুন যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবে ড্রাগস ডিলিং, আর্মস ডিলিং সহ এমন এমন অসংখ্য অবৈধ কাজ সম্পূর্ণ করা হয় যার সম্পর্কে আজ এই পোস্টে খুলে বলা সম্ভব নয়। ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের সেই কালো অধ্যায় যেখানে যেকোনো কিছু যেকোনো সময় করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবও কিন্তু সাধারন গুগল সার্চ করে কখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।যদি আপনি ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়বে একটি বিশেষ ইন্টারনেট ব্রাউজার। যা ইন্টারনেটে টর (TOR) ব্রাউজার হিসেবে পরিচিত। এবং আপনি যদি এই টর ব্রাউজার ব্যবহার করেন তবেই ডার্ক ওয়েবে যেকোনো কিছু অ্যাক্সেস করতে পারবেন। কিন্তু আবার বলে রাখছি এটি ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অবৈধ। সকল প্রকারের ব্লাক মার্কেট অবস্থান করে ডার্ক ওয়েবে। টর ব্রাউজার আপনার অ্যাড্রেসকে অনেক অনেক লোকেশনে বাউঞ্জ করিয়ে তবেই কাঙ্ক্ষিত ওয়েব অ্যাড্রেসে পৌঁছে দেয়। আপনার গন্তব্বে যে ইউজার থাকে সেই শুধু আপনাকে ট্রেস করতে পারে। তাছাড়া এমনি যে কেউ আপনাকে ট্রেস করতে পারবে না। টর প্রথম প্রথম আবিষ্কার হয়েছিলো ইউএস নেভির জন্য। কিন্তু এটি বর্তমানে একদম ওপেন একটি বিষয় হয়ে গিয়েছে। গোটা ইন্টারনেট জগতে জালের মতো ছড়িয়ে আছে এই ডার্ক ওয়েব। এবং একে নিয়ন্ত্রন করা অনেক মুশকিল ব্যাপার। সরকার ডার্ক ওয়েব ধিরেধিরে বন্ধ করছে। কিন্তু এখনো ডার্ক ওয়েবের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে আমি বলবো না যে একদম টর ব্রাউজারই ব্যবহার করবেন না। টর ব্রাউজার আপনি ভিপিএন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এটির মাধ্যমে সার্ফেস ওয়েব ও ডীপ ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। কিন্তু ভুলেও ডার্ক ওয়েবের দিকে পা বাড়াবেন না।


আরো জানতে পারেন... 

Dark Web, Deep 

Web কি ? এবং এটা কি ভাবে ব্যবহার করবেন?


1 comment:

ডিভাইস ফিংগারপ্রিন্টিং কি এবং কিভাবে কাজ করে?

  ডিভাইস ফিংগারপ্রিন্টিং কি এবং কিভাবে কাজ করে? আমরা সবাই ইন্টারনেটে কুকিজ এবং ব্রাউজার সেশনস ইত্যাদি ব্যাবহার করে ইউজারের ব্যাপারে ইনফরমেশন...